দিনাজপুরে গম চাষে সাফল্য

দিনাজপুরে গম চাষে সাফল্য

দিনাজপুর হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি তত্ব বিভাগ বীজ ফার্টিলাইজেশনের নতুন পদ্ধতিতে গম চাষে ব্যাপক সাফল্য পেয়েছে। এতে যেমন ইউরিয়া সারের সাশ্রয় ঘটেছে তেমনি পাওয়া গেছে অধিক ফলন। এই বৈজ্ঞানিক বীজ ফার্টিলাইজেশনের নতুন পদ্ধতি এলাকার কৃষকের মাঝে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে।

দিনাজপুর হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি তত্ব বিভাগ ম্যাজিক গ্রোথ-তরল সার পরীক্ষামূলকভাবে বিভিন্ন ফসল ও ফলে ব্যবহার শুরু করেছে। ইতোমধ্যে গম ও বোরো ধানে ব্যবহার করে পেয়েছে অশাতীত ফলন। সেই সাথে সাশ্রয় ঘটেছে ৪০ ভাগ ইউরিয়া সারের।

বিএডিসি’র রাজশাহী অঞ্চলের সার বিভাগের যুগ্ম পরিচালক কৃষিবিদ আরিফ হোসেন খান উদ্ভাবন করেছে এ তরল সার ম্যাজিক গ্রোথ। এই তরল সার মিশ্রিত বীজগম বপণ ও ফসলে স্প্রে ব্যবহারের মাধ্যমে জমিতে সাশ্রয় ঘটছে ৪০ ভাগ ইউরিয়া সারের। বাড়ছে ফসলের ২০ ভাগ উৎপাদন। এ পদ্ধতি কৃষকের মাঝে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে।

এলাকার কৃষক আজাহার আলী দাফাদার জানান, তিনি এ গম দেখে অভিভুত হয়েছেন। সহচরাচর পদ্ধতিতে তিনি গম চাষ করেছেন। সারও দিয়েছেন পরিমান মতো। কিন্তু এমন ফলন হয়নি তার। তাই তিনি আগামীতে এই পদ্ধতি ব্যবহার করবেন।

ম্যাজিক গ্রোথ-তরল সার উদ্ভাবক আরিফ হোসেন খান জানান, গম চাষের ক্ষেত্রে এ পদ্ধতি আমাদের দেশে একবারে নতুন হলেও এই প্রযুক্তিতে অষ্টেলিয়া এবং কানাডাতে অনেক আগে থেকেই গম চাষ হয়ে আসছে। আমাদের দেশের চাষিরা গম চাষের সময় শুধু মাটিতেই সার দিয়ে থাকে কিন্তু উদ্ভাবিত এই প্রযুক্তিতে মাটির পাশাপাশি বিভিন্ন পুষ্টি উপাদানে সম্বৃদ্ধ তরল রাসায়নিক পদার্থ ম্যাজিক গ্রোথ কৌশলে বীজের মধ্যে ঢুকিয়ে দেওয়া হয় এবং পাতার উপরে স্প্রে করা হয়। বীজের মধ্যে যখন অতিরিক্ত কিছু পুষ্টি ঢুকিয়ে দেওয়া হয় তখন তা বীজের গজানোর গতি তরান্বিত করে, গাছের শিকড়ের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়।

এ জন্য প্রথম থেকেই গাছের বৃদ্ধির গতি বেশী ভালো থাকে, গাছের টিলার সংখ্যা কিছু বেশী হয়, শীষে দানা বেশী হয় এবং দানার পুষ্টতা বেশী হয়। এই প্রযুক্তি ব্যবহারে ইউরিয়া সারের ব্যবহারও কিছু কমিয়ে দেওয়া সম্ভব। চাষির মাঠে এভাবে গমের ফলন শতকরা ২০ ভাগ বৃদ্ধি করা সম্ভব।

হাজী দানেশ বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি তত্ব বিভাগের প্রফেসর ড. মো. শহিদুল ইসলাম জানান, শুধু গমে নয়, বোরো ধানেও ব্যবহার হচ্ছে ম্যাজিক গ্রোথ তরল সার। ইউরিয়া সারের বিকল্প হিসেবে ফসলে ব্যবহার করা হচ্ছে এই ম্যাজিক গ্রোথ-তরল সার। এই সার ব্যবহার করে ইউরিয়া সার সাশ্রয়ের পাশাপাশি ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধির মাধ্যমে দেশের খাদ্য ঘাটতি কিছুটা হলেও কমানো সম্ভব বলে তিনি দাবি করেন।

তরল মিশ্রিত সার ব্যবহারে বীজগম বপণ করে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ব্যাপক সাফল্য পেয়েছেন। তাদের এই সাফল্য এখন অনেকের অনুপ্রেরণা। এই পদ্ধতিতে বীজগম বপণ করলে ফলন আরও বৃদ্ধি পারে এমটাই মন্তব্য করেছেন কৃষিবিদরা।